আনোয়ারার বারাসাত ইউনিয়নের দুধকুমড়া গ্রামে গবাদি পশুর খামারে হামলার সময় একটি বাঘ আটক করেছেন খামারিরা। তিন রাতে বাঘটি এক ডজনের বেশি ভেড়ার গলায় আক্রমণ চালিয়ে মেরে ফেলেছে। প্রবাসীর স্ত্রীসহ দুই নারীকেও কামড় দিয়েছে।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে গরুর বাছুরের ওপর আক্রমণ করলে নুরুল আনোয়ার নামের একজন খামারি স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় বাঘটি জাল দিয়ে আটকে ফেলে।
নুরুল আনোয়ার অগ্রদৃষ্টিকে জানান, সোমবার সকালে ভেড়ার খামারে ১০টি ভেড়া মরে পড়ে থাকতে দেখি। সব ভেড়ারই গলায় ছিল ক্ষত, কিন্তু রক্তপাত খুব বেশি নয়। মনে হলো কোনো হিংস্র জন্তু রক্ত চুষে খেয়ে ফেলেছে। তাই রাতে পাহারা দিচ্ছিলাম। রাত নয়টার দিকে বিদ্যুৎ চলে গেল। টর্চ নিয়ে বের হলাম। একসময় বিদ্যুৎ এল। অমনি একটি বাছুর অস্বাভাবিকভাবে চেঁচিয়ে উঠল। মনে হলো কেউ গলা চেপে ধরেছে। টর্চ মেরে দেখলাম কুকুরের চেয়ে বড় একটি প্রাণী আক্রমণ করেছে। আমি চিৎকার করে স্থানীয়দের জড়ো করে খামারের দরজায় জাল দিয়ে বাঘটি আটকে রাখি।
তিনি জানান, স্থানীয় মুরুব্বিরা বলছেন এটি মেছোবাঘ। পারকি সৈকতে মাছ খেয়েই জীবন কাটাত। ইদানীং মাছের আকাল হওয়ায় ছোট প্রাণী শিকার করছে। তবে কেউ কেউ বলছেন এটি নেকড়ে বাঘ।
আটকে রাখার পরপরই পুলিশে খবর দেওয়া হয় জানিয়ে তিনি বলেন, রাত ১১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসেছে। তারা বন বিভাগকে খবর দিয়েছে বাঘটি জীবন্ত উদ্ধার করার জন্য।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েক দিন আগে নূর আহমদ মেম্বারের খামারে দুটি ভেড়াকে একই কায়দায় মেরেছে বাঘটি। এ ছাড়া একজন প্রবাসীর স্ত্রী মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় কামড় দিয়েছিল কালো একটি প্রাণী। ওই নারীর শোরগোলে শাশুড়ি বেরিয়ে এলে তাকেও কামড়ে দেয় প্রাণীটি। ধারণা করা হচ্ছে তাদেরও বাঘটিই কামড় দিয়েছে।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল মাহমুদ অগ্রদৃষ্টিকে জানান, বাঘ আটকের খবর পেয়ে একজন অফিসারের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তারা জানিয়েছে বাঘ সদৃশ একটি প্রাণী আটক অবস্থায় আছে খামারে। এরপর বন বিভাগকে খবর দেওয়া হয়েছে।